অনির্বাণের বেশকিছু মানবিক কর্মকাণ্ড ইতিমধ্যেই অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রত্যেকটি সাফল্যের পিছনে কোনো-না-কোনো মহানুভব ব্যক্তি মূল ভূমিকা পালন করেছেন। অনির্বাণ সেক্ষেত্রে সংযোগের ভূমিকা পালন করেছে। স্বেচ্ছাসেবকরা শ্রম-ঘাম দিয়ে উদ্যোগগুলিকে সার্থক করেছে।

এরকম আরো একটি কাজ হল আত্মীয় পরিজন বিহীন অসহায় দুইজন মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী কে ফরিদপুর এবং ময়মনসিংহের সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো।এর আগে কয়েক মাস ধরেই অনির্বাণের স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। নোংরা, পূতিগন্ধময় পরিবেশ থেকে ভালো পরিবেশে স্থানান্তর, নতুন জামা কাপড়ের ব্যবস্থা এবং বিগত কয়েক মাস খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এই কাজ করতে যেয়ে অর্থের পুরোটাই যোগান দিয়েছেন আয়ারল্যান্ড প্রবাসী হবিগঞ্জের শামীম সাহেব। আজকের যাতায়াত ভাড়া সহ এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অনির্বাণের স্বেচ্ছাসেবকরা পরম মমতায় এবং ভালোবাসায় এই অসহায় প্রতিবন্ধীদের সেবা করেছে, বিগত কয়েক মাস।

আজও অনির্বাণের ৬ জন স্বেচ্ছাসেবক পাইকগাছার বৃদ্ধা আমেনা ও হরিঢালী গোলাবাটি মোড়ের পাগল মন্টুকে  অতি যত্নে একটি এসি হায়েক্স মাইক্রোতে নিয়ে ফাতেমাকে ফরিদপুরের এবং মন্টুকে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌছে দিয়েছে। যাত্রাপথে ফাতেমা গাড়িতে বারবার বমি মলত্যাগ করলেও অনির্বাণের স্বেচ্ছাসেবকরা পরম মমতায় তাকে আগলে রেখেছিল। তবে মন্টুর আচরণ ছিল প্রায় স্বাভাবিক।

এই মন্টু এবং ফাতেমা বছরের পর বছর ধরে আমাদের এলাকাতে মানবেতর জীবন যাপন করেছে। আমাদের জ্ঞানীগুণী, ধনী ও বিদগ্ধ সমাজ সেবকরা দেখেই গেছে, তাদের অনুভূতিতে আঁচড় কাটতে পারেনি। অথচ নিজের চোখে না দেখে, শুধুমাত্র ভিডিওতে দেখেই প্রাণ কেঁদে উঠেছে সুদূর আয়ারল্যান্ডে থাকা হবিগঞ্জের মানুষ শামীম সাহেবের। তিনি শুধু টাকা-পয়সার দিয়েই বসে থাকেননি। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে নিজে মনিটর করেছেন, এই কাজ করার জন্য যোগাযোগ করেছেন প্রত্যেকটা অফিসে।

অনির্বাণের স্বেচ্ছাসেবকরাও ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। যেখানে বর্তমান সমাজে নিজের বৃদ্ধ বাবা- মাকে সন্তানেরা দেখেনা, সেখানে অনির্বাণের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক কয়েকমাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনের ফেরানোর জন্য। আজও ছেলেরা তাদের নিয়ে গেছে নিজের মা ও ভাইয়ের মত দুহাতে আগলে। এধরনের ফাতেমা ও মন্টুদের পাশে শুধুমাত্র তাসনুভা-শামীম ফাউন্ডেশন ও অনির্বাণ লাইব্রেরি নয়, অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। শুধুমাত্র ফেসবুকে লাইক, কমেন্ট এবং কৃতজ্ঞতা জানালেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না।

অনির্বাণ এর পক্ষ থেকে খুলনার ডিসি মহোদয়,পাইকগাছার ইউ এন ও, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই । তারাও আন্তরিকভাবে এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিয়েছেন।