আজ তুলে ধরছি এমন এক কীর্তিমানের কথা যিনি শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হয়ে  অসংখ্য শিক্ষার্থীর ভাগ্যোন্নয়নে বিশেষ ভুমিকা রেখেছেন। নিজের বিষয়ের উপর অগাধ পাণ্ডিত্য এবং শিক্ষক হিসাবে বিপুল জনপ্রিয়তা তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। হাজারো ছাত্রের অন্তরে তিনি এক বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। শ্রদ্ধা, সম্মান, ভক্তি, আর ভালোবাসার এই মহান শিক্ষকের নাম অধ্যাপক কালিদাস চন্দ্র চন্দ্র।

অধ্যাপক  চন্দ্র ১৯৫০ সালের ২০ শে নভেম্বর পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শ্রীযুক্ত বাবু সুধীর কৃষ্ণ চন্দ্র ও মাতা শ্রীমতী সরলা বালা চন্দ্র। তিনি স্থানীয় হরিদাশকাটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা এবং স্থানীয় হরিঢালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির হতে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির হতে এসএসসি এবং ১৯৬৮ সালে সাতক্ষীরা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন । তিনি সরকারি স্কলারসিপ নিয়ে ১৯৭১ সালে সরকারি ব্রজলাল কলেজে পড়াশুনা করেন । উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি  শরণার্থী হিসাবে ভারতে  আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতি রেজিস্ট্রেশন করে জনাব খায়বার হোসেন পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহাকুমার টেটরা মুক্তি ফৌজের রিসিপশন ক্যাম্পে অফিশিয়াল পদে কর্মরত হন। মুক্তিযুদ্ধের অবসানের পর তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত বি.এসসি(সম্মান) পরীক্ষা- ১৯৭১ এ অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে তিনি আবারও সরকারি স্কলারশীপ নিয়ে পড়াশুনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে  প্রথম শ্রেণী অর্জন করে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে এম. এসসি পাশ করেন।

১৯৭৪ সাল থেকে তিনি পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে দীর্ঘ ৩৭ বৎসর সুনামের সাথে অধ্যাপনা করে ২০১০ সালে অবসর গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য তিনি অধ্যাপনা জীবনে প্রায় ৩০ বৎসর যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষক এবং ৩ বৎসর প্রধান পরীক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক চন্দ্র সারাদেশে সুনাম অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান অনির্বাণ লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে ১৯৯০ সাল হতে ২০০১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১১বৎসর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লাইব্রেরির গঠনতন্ত্র রচনায় নেতৃত্ব দেন। ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি হতে তিনি পুনরায় কার্যকরী পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৭৮ সালে মাহমুদকাটি গ্রামের বিশিষ্ট স্বর্ণ ব্যবসায়ী জয়দেব দত্তের কন্যা ভারতী দত্তকে বিবাহ করেন।বর্তমানে তিনি চার কন্যার জনক । কন্যারা হলেন

১. মহুয়া চন্দ্র ,MBBS,BCS(Health),FCPS(Paediatrics ),FCPS (Child Neourology )

২.পম্পা চন্দ্র,MBBS,BCS(Health),FCPS(Darmatology),

৩.মৌমিতা চন্দ্র ,BSc (Agri.Engineering),MS(FPM), Diploma-in-Banking

৪.কুসুম কেয়া চন্দ্র ,৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ।

আমরা এই মহান শিক্ষক এবং সমাজসেবকের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘ জীবন প্রার্থনা করি।