অশ্রুসিক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে চির বিদায় নিলেন অনির্বাণ লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মানুষ তৈরীর কারিগর অধ্যাপক কালিদাস চন্দ্র চন্দ্র স্যার।

আমাদের কপোতাক্ষ-বিধৌত পাইকগাছা উপজেলার এই জনপদ যদি বাংলাদেশ হয়, তবে সে দেশের ‘আব্দুর রাজ্জাক’ বা ‘শিক্ষকদের শিক্ষক’ হচ্ছেন কালিদাস চন্দ্র চন্দ্র স্যার। । এ জনপদে বাংলাদেশ ক্যাডার সার্ভিসে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে সকল শিক্ষকগণের জীবনে তাঁর অবদান ছিলো অনস্বীকার্য। যুদ্ধোত্তর দেশের খুব সাধারণ একটা কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বিজ্ঞান বিভাগের অন্যান্য ক্লাস এমনকি মানবিক বিভাগের ক্লাসও নিতেন। বিদ্যুৎহীন অজ-পাড়াগাঁয়ে বসেও যিনি তাঁর ছাত্রদের মেঘশূন্য শরতের আকাশ দেখিয়ে নক্ষত্র চেনাতেন, মহাবিশ্ব সম্পর্কে বলতেন। তিনি বলতেন, “শহরের ছাত্ররা তো ভালো শিক্ষক পাবে, কিন্তু আমার গ্রামের ছাত্রদের কে শেখাবে আমি না থাকলে।” নাম-যশের মোহ তাঁকে ছুঁতে পারেনি, এক প্রকার লোকান্তরিত নির্জনেই একটা জীবন কাটিয়ে গেলেন। কালিদাস চন্দ্র স্যারের জীবনাবসনে, আমাদের এই জনপদের একটা যুগাবসান হলো। জ্ঞান-মেধা-যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও যে প্রজন্ম লোকান্তরালেই সাদামাটা জীবন কাটিয়ে গেছেন, সেই প্রজন্মের অবসান হলো হয়তো।